একাদশ শ্রেণিপ্রাচীন-বাংলার-সমাজ-সাহিত্য

প্রাচীন বাংলার সমাজ ও সাহিত্য চর্যাপদ থেকে 5+ রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণি বাংলার সাহিত্য সংস্কৃতি | Charyapad Descriptive Question Answer Class 11 | PDF


প্রাচীন বাংলার সমাজ ও সাহিত্য চর্যাপদ থেকে 5+ রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণি বাংলার সাহিত্য সংস্কৃতি | Charyapad Descriptive Question Answer Class 11 | PDF

✅ Join Our Telegram Channel ✅




প্রিয় একাদশের শিক্ষার্থীরা,

আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো মাধ্যমিক একাদশ শ্রেণির বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি প্রাচীন বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতি  ||  || ৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর | Class Xi 11 Bengali Question and Answer  | 11th Bengali Examinationএকাদশ শ্রেণির বাংলা সাহিত্য অধ্যায় । একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাবে এগুলি তোমাদের ফাইনাল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।

প্রাচীন বাংলার সমাজ ও সাহিত্য বা চর্যাপদ থেকে বহুবিকল্প-ভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) | তোমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে ৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা আছে । আমাদের আশা এই প্রশ্নগুলি তোমাদের পরীক্ষায় খুবই কাজে আসবে।


চর্যাপদ রচনাধর্মী


[প্র] চর্যাপদ কে আবিস্কার করেন? সন্ধ্যাভাষা বলতে কী বোঝ? বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে চর্যাপদের গুরুত্ব নির্ণয় করো। [২০১৪/২০১৯]

(ক) বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন চর্যাপদ আবিস্কার করেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, ১৯০৭ সালে নেপালের রাজ দরবার থেকে।

আরো পড়ুন :  WB HS XI Previous Years Bengali Question Papers PDF একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রশ্নপত্র pdf

(খ) প্রাচীন বাংলা ভাষায় রচিত চর্যাপদের বহু শব্দ এখন অপ্রচলিত। চর্যার কবিগণ সংকেত বহুল শব্দ ব্যবহার করেছেন চর্যাপদে। তাই এর ভাষাকে আলো-আঁধারি বা ‘সন্ধ্যাভাষা’ বলা হয়েছে।

(গ) বাংলা সাহিত্যে চর্যাপদের গুরুত্ব =

(১) চর্যা প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের একমাত্র নিদর্শন, 

(২) বাংলার লোকায়ত জীবন ও সংস্কৃতির কথা এখানে প্রথম পাওয়া যায়, 

(৩) কাব্যসংগীত ও সাধনসংগীতের প্রথম নিদর্শনও চর্যা, 

(৪) পাদাকুলক, প্রত্নমাত্রাবৃত্তের প্রথম ব্যবহার হয় এখানে, 

(৫) প্রাচীন বাংলাভাষার প্রথম পূর্ণ পরিচয়ও চর্যাপদে মেলে।

চর্যাকারেরা অন্ত্যজ, ব্রাত্য, লোকায়ত মানুষের জীবনের কথা বলেছেন। চর্যাপদের মধ্যে উচ্চবিত্ত, মার্জিত মানুষের পরিশীলিত জীবন উপস্থাপিত হয় নি। সমাজের প্রান্তবর্তী ডোম, শবর, ব্যাধ, তাঁতি, মাঝি-মাল্লা প্রমুখের জীবনের চালচিত্রই চর্যার মূল বিষয় হয়ে উঠেছে।



[প্র] চর্যাপদের পুথি কে আবিস্কার করেন? আনুমানিক কোন সময়ে চর্যাপদ্গুলি রচিত হয়েছিল? এই পদগুলিতে তৎকালীন সমাজজীবনের যে প্রতিফলন দেখা যায়, তা সংক্ষেপে লেখ। [২০১৭]

(ক) চর্যাপদ আবিষ্কার করেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, ১৯০৭ সালে নেপালের রাজ দরবার থেকে।

(খ) চর্যাপদ্গুলি রচিত হয়েছে আনুমানিক দশম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে।

(গ) সমাজজীবন =

নদীমাতৃক বাংলাদেশ : দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর সমাজ-ইতিহাস-ভূগোলকে উপস্থাপন করেছে চর্যাপদ। নদীমাতৃক বাংলাদেশের খাল-বিল, নদী-নালা, কাদাময় রাস্তা-ঘাট, ভাসমান নৌকা, গুণটানা, পারাপার করা ইত্যাদি থেকে তৎকালীন ভূগোলের একটি মানচিত্র চোখে পড়ে।

জীবন-জীবিকা : চর্যার মানুষ দৈহিক শ্রমনির্ভর জীবন-জীবিকার সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। যেমন–

  • অ। নৌকা টানা, মানুষ পারাপার করা।
  • আ। ঝুড়িবোনা, বাঁশ ও বেতের অন্যান্য কাজ করা।
  • ই। তাঁত বোনা।
  • ঈ। গৃহ নির্মাণ করা। 
  • উ। মদ্য তৈরি করা।
  • ঊ। মদের পাত্র, তৈজসপত্র ইত্যাদি তৈরি করা। 

বাসস্থান : অন্ত্যজ নিচু শ্রেণির ডোম, শবর প্রমুখ বাস করতেন ‘নগর বাহিরে’। তারা ধনী ব্যক্তিদের সঙ্গে নগরে থাকবার কোনো সুযোগ-সুবিধা পেতেন না। 

আরো পড়ুন :  WBCHSE XI Bengali Question Paper 2023 pdf download | একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রশ্নপত্র ২০২৩ pdf

খাদ্য ও সুরাসক্তি : চর্যাপদে তৎকালীন বাঙালি কী খেতেন এবং খাদ্যতালিকায় তারা কোন্ বিষয়গুলি রাখতে পছন্দ করতেন, তার বিবরণ আছে। যথা—

  • অ। সেকালে প্রধান খাদ্য ছিল ভাত।
  • আ মাছ, মাংস, দুধ, লাউ খাদ্য হিসাবে প্রিয় ছিল।
  • ই। পছন্দের বিষয় ছিল তেঁতুল।
  • ঈ। অনায়াসে চলত মদ্যপান।

বিবাহ ও যৌতুক :

  • বাদযন্ত্র, নৃত্য, হৈ-হুল্লোড়ে বিবাহ সম্পন্ন হত।
  • অনুলোম প্রতিলোম বিবাহ তখন প্রচলিত ছিল,
  • বিবাহে যৌতুক নেওয়া হত।

নৃত্য-গীত-অভিনয় : বিবাহ ছাড়াও ধর্মীয় উৎসব-পার্বণে নৃত্য-গীতের প্রচলন ছিল। নাট্যাভিনয় জনপ্রিয় হয়েছিল। চর্যাকার লিখেছেন—”নাচন্তী বাজিল গায়ন্তী দেবী বুদ্ধ নাটক বিসমা হোই।”

খেলাধূলা : অশ্বচালনা জনপ্রিয় ছিল। পাশাখেলার প্রচলন ছিল।

পুলিশ-প্রশাসন : চোর-ডাকাতের উপদ্রব ছিল। পুলিশ-দারোগা দস্যু দমনে যথেষ্ট তৎপর ছিলেন। 

অবৈধ সম্পর্ক ও সামাজিক অধঃপতনের অন্যান্য চিত্র :

  • গভীর রাতে গৃহবধূর অন্যত্র গমনের চিত্র পাওয়া যায়।
  • মাতালের উৎপাত ছিল।
  • ব্রাহ্মণের বৃত্তি নিয়ে কটাক্ষ করা হত।


[প্র]
চর্যাপদের পুথি আবিষ্কার ও এর রচনাকাল সম্পর্কে
লেখ।

(ক) চর্যাপদের পুথি আবিষ্কার = বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রথম প্রামাণিক
নিদর্শন ‘চর্যাপদ’ আবিষ্কৃত হয় নেপালের রাজকীয় গ্রন্থাগারে। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে সুপণ্ডিত
ভাষাতাত্ত্বিক মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ‘চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়’-এর পুথি আবিষ্কার
করেন। তিনি এই পুথির সঙ্গে আরও তিনটি পুথি উদ্ধার করেন। সেগুলি হল—

  • এক। চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়ের সংস্কৃত টীকা
    মুনিদত্তের ‘নির্মলগিরা’। 
  • দুই। সরোজবজ্র
    ও কৃষ্ণাচার্যের লেখা দুটি দোঁহাকোষ এবং দোঁহাকোষের দুটি সংস্কৃত টীকা। 
  • তিন। ডাকার্ণব।

সর্বমোট চারটি পুথি একত্রিত করে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
মহাশয় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে ‘হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা
ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোঁহা’ নামে গ্রন্থটি প্রকাশ করেন।

(খ) চর্যাপদের রচনাকাল = আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
চর্যাপদের ভাষা এবং কবিদের জীবিতকাল অনুসারে প্রাচীন বাংলার এই সাহিত্যিক নিদর্শনের
রচনাকাল ১০ম থেকে ১২শ শতাব্দী বলে গ্রহণ করেছেন। মহম্মদ শহীদুল্লাহ চর্যার আনুমানিক
রচনাকাল ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দী বলেছেন। যাইহোক চর্যার ভাষা, রচনারীতি ও কবিদের আর্বিভাবকাল
অনুসারে এর রচনাকাল দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী বলা যায়।

আরো পড়ুন :  বিদ্যাপতির ভাব সম্মিলন কবিতার উৎস, পর্যায়, সারাংশ, শব্দার্থ, মূলসুর

 

 

[প্র]
চর্যাপদের পুথিতে কটি পদ পাওয়া গেছে। চর্যাপদের
কবি পরিচয় সম্পর্কে লেখো।

(ক) প্রাপ্ত পদ = চর্যাপদের যে তালপাতার পুথির আবিষ্কৃত
হয়েছে তার সবকটি পাতা পাওয়া যায় নি। তাই প্রাপ্ত পদের সংখ্যা সাড়ে ৪৬টি। এগুলির মধ্যে
সবথেকে বেশি পদ লিখেছেন কাহ্নপাদ—১৩টি পদ।

(খ) কবি পরিচয় = মূল গানে ও টীকায় ২৩ জন কবির নামোল্লেখ
আছে। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কবি হলেন কাহ্নপাদ, লুইপাদ, ভুসুকুপাদ, সরহপাদ, শবরপাদ
প্রমুখ। তবে অনেকেই বলেন চর্যাপদের ভণিতায় থাকা নামগুলি অধিকাংশই তাঁদের প্রকৃত নাম
নয়, তা তাঁদের ছদ্মনাম।

চর্যার কবিদের সকলের জীবন সম্পর্কে বিশেষ তথ্য পাওয়া যায় না।
বেশিরভাগ তথ্যই স্বল্প। ২৩ জন (মতান্তরে ২৪) কবির গানের সংখ্যা এইরূপ—

  1. কাহ্নপাদ—১৩টি, 
  2. ভুসুকুপা—৫টি, 
  3. সরহপাদ—৪টি, 
  4. কুক্কুরীপাদ—৩টি, 
  5. লুইপাদসহ কয়েকজন—২টি এবং 
  6. চাটিলপাদসহ অন্যান্য—১টি।

চর্যাপদের কবিদের ধর্মমত সম্বন্ধে বলতে গিয়ে পণ্ডিত হরপ্রসাদ
শাস্ত্রী বলেছেন, এঁরা সকলেই বৌদ্ধ সহজিয়া সিদ্ধাচার্য। যদিও বৌদ্ধধর্মের অন্যান্য
শাখাসহ তান্ত্রিকমতের বিশ্বাসী ছিলেন চর্যার অনেক কবিই। 

পিডিএফ লিঙ্ক নিচে 

✅ Go Home Now ✅



আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হোন



————————————————————-


File Format : পিডিএফ

File Language : বাংলা

File Location : গুগল ড্রাইভ


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: সংরক্ষিত !!