Join Telegram Join Facebook বাংলা রচনা
সাহিত্যের ইতিহাস সাজেশান Question-Paper
WBCS স্কুল নোটস ইতিহাস

নবম শ্রেণির ইতিহাস | ৩য় অধ্যায় উনবিংশ শতকে ইউরোপ | 10+ ব্যাখ্যামূলক ৪ নম্বরের প্রশ্ন | Class IX History | Unabingsha Satak-e Europe | Descriptive 4 Marks | 3rd Chapter | PDF

✅ Join Our Telegram Channel ✅






প্রিয় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা,

আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় ||  উনবিংশ শতকের ইউরোপ  ||  ৪ নম্বরের ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর | Class IX Class 9 History Question and Answer  | 9th History Examinationনবম শ্রেণির ৩য় অধ্যায় সংঘবদ্ধতার উনবিংশ শতক ইউরোপ ।  ৪ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাবে |  নবম শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাবে এগুলি তোমাদের ফাইনাল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।


উনবিংশ শতকে ইউরোপ তৃতীয় অধ্যায় থেকে বহুবিকল্প-ভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) | তোমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে নবম শ্রেণির ইতিহাস ৩য় অধ্যায় উনবিংশ শতকে ইউরোপ  ৪ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা আছে । আমাদের আশা এই প্রশ্নগুলি তোমাদের পরীক্ষায় খুবই কাজে আসবে।



নবম শ্রেণির ইতিহাস | ৩য় অধ্যায় উনবিংশ শতকে ইউরোপ  | 10+ ব্যাখ্যামূলক ৪ নম্বরের প্রশ্ন | Class IX History | Unabingsha Satak-e Europe | Descriptive 4 Marks | 3rd Chapter | PDF 




যে যে প্রশ্নের উত্তর আছে(toc)



১. ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য কি ছিল?


[ভূমিকা] জানা যায় নেপোলিয়নের পতনের পর ইউরোপ নতুনভাবে গঠনের জন্য বিজয়ী মিত্র শক্তিবর্গ অস্ট্রিয়ার রাজধানীর ভিয়েনাতে ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে যে আন্তর্জাতিক সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়েছিল সেটিকেই ‘ভিয়েনা সম্মেলন’ বলা হয় ।

উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য

ভিয়েনা সম্মেলনের অনেক উদ্দেশ্য লক্ষ করা যায় সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো–

  • ক. ইউরোপের পুনর্গঠন : ইউরোপের পুনর্গঠন ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। নেপোলিয়নের নীতির মাধ্যমে ইউরোপে যে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছিল ন্যায় ও সততার ভিত্তিতে তার পুনর্গঠন করা। অপরদিকে জার্মানি, ইতালি, রাইন প্রভৃতি অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা হয় এবং নেপোলিয়ন পুরাতন রাজবংশগুলিকে নিয়ে রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
  • খ. শান্তি প্রতিষ্ঠা : ফ্রান্সকে এমন সীমানায় আবদ্ধ করা যাতে ভবিষ্যতের ফ্রান্স ইউরোপের শান্তি পুনরায় ভাঙতে না পারে।
  • গ. রাজবংশ পুন:প্রতিষ্ঠা : দেখা যায় ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ইউরোপের যে সমস্ত রাজা ও রাজবংশ রাজত্ব করত তাদের পুন:প্রতিষ্ঠা করা।
  • ঘ. সাম্য শক্তি প্রতিষ্ঠা : চতু:শক্তি নিজেদের ক্ষতি পূরণের জন্য রাজ্য ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে সাম্য শক্তি নীতিকে প্রয়োগ করা হয়।
  • ঙ. মর্যাদা ও গোপন চুক্তি : নেপোলিয়ানকে পরাজিত করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্য যে গোপন যুক্তিগুলি হয়েছিল তার মর্যাদা দান করা।
  • চ. ক্ষতিপূরণ : নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে ইউরোপের দেশগুলি যে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেই দেশগুলিকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দানের ব্যবস্থা করা ।



২. ভিয়েনা সম্মেলনের মূল তিনটি নীতির পরিচয় দাও?

-----------------------------------------------------------
-----------------------------------------------------------

[ভূমিকা] ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মেটারনিক এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত করেন।



উদ্দেশ্য বা নীতি

এই ভিয়েনা সম্মেলনে মোট তিনটি নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। সেগুলি হল– ১. ন্যায্য অধিকার নীতি, ২. ক্ষতিপূরণ নীতি, ৩. শক্তিসাম্য নীতি। এগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো—

  • [ন্যায্য অধিকার নীতি] ফরাসি বিপ্লবের আগে যেসব রাজা বা রাজবংশ রাজত্ব করতেন সেখানে তাদের পুন:প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এই নীতি অনুযায়ী—১. ফ্রান্সের সিংহাসনে বুরবোঁ বংশীয় অষ্টদশ লুই-কে বসানো হয়। ২. অস্ট্রিয়ার হ্যাপসবার্গ বংশকে তাদের আগের রাজ্য ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
  • [ক্ষতিপূরণ নীতি] নেপোলিয়নের সঙ্গে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রগুলি বিভিন্ন অঞ্চল নিজেদের মধ্য ভাগ করে নেয়। ফিনল্যান্ড, রাশিয়া পায় বেসারাবিয়া ও পোল্যান্ডের বৃহদাংশ। ইংল্যান্ড লাভ করেছিল ভূমধ্যসাগরের মালদ্বীপ, হোলিগোল্যান্ড, মরিশাস, সিংহল।
  • [শক্তি সাম্য ও নীতি] শক্তি সাম্য নীতি অনুসারে--১. ফ্রান্সের সেনাবাহিনী ভেঙ্গে দেওয়া হয়। ২. ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য ফ্রান্সের চারিদিকে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রবেষ্টনী গড়ে তোলা হয়। ৩. ফ্রান্সকে বিপ্লব-পূর্ব সীমারেখায় ফিরিয়ে আনা হয়।

[উপসংহার] এই সম্মেলনের নীতিগুলি সামগ্রিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও বিজ্ঞোচিত ব্যবস্থা হলেও ত্রুটিমুক্ত ছিল না।



৩. মেটারনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে লেখ?


[ভূমিকা] প্রিন্স মেটারনিক ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী। ১. রাজতন্ত্রকে পুন:প্রতিষ্ঠিত করে প্রাক-বিপ্লব অবস্থার প্রত্যাবর্তন। ২. ইউরোপের রাজনীতিতে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য অক্ষুণ্ণ রাখা এবং ৩. মেটারনিক ভিয়েনা চুক্তির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষা করতে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন তাকেই মেটারনিক ব্যবস্থা বলা হয়।

মেটারনিক ব্যবস্থা

জানা যায় মেটারনিক ব্যবস্থা ছিল অস্ট্রিয়ার সাম্রাজ্যকে রক্ষা করার এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো—

  • a. রক্ষণশীলতা— অস্ট্রিয়ার মন্ত্রী মেটারনিক ছিলেন রক্ষণশীল। অর্থাৎ উদারতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদের তিনি তীব্র বিরোধী ছিলেন।
  • b. দমন নীতি— অস্ট্রিয়ার জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপকে কঠোরভাবে দমন করেন। যেমন, ইতালি ও জার্মানির জাতীয়তাবাদকে দমন করতেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
  • c. শাসন নীতি— জাতিগত সাম্রাজ্যে অস্ট্রিয়া সুযোগ গ্রহণ করে ‘বিভাজন ও শাসন নীতি’ প্রয়োগ করেন।
  • d. আন্দোলন দমন— মেটারনিক ইতালি ও জার্মানিসহ ইউরোপে বিপ্লবের সম্ভাবনা দূর করার জন্য ইউরোপীয় শক্তি সমবায়ের সাহায্য নেন।

উপসংহার— ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মেটারনিক পদ্ধতি ইউরোপে সাফল্য লাভ করেছিল। আবার ইউরোপের উদারপন্থী ভাবধারাকে রুদ্ধ করেছিল।



৪. ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের জুলাই বিপ্লবের চারটি কারণ লেখো?


[ভূমিকা] ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লব সংগঠিত হয়। এই জুলাই বিপ্লবের মূল কারণ ছিল ফরাসি রাজতন্ত্রের সঙ্গে জাতীয়তাবাদের দ্বন্দ্ব।

কারণ

১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের জুলাই বিপ্লবের কিছু কারণ লক্ষ করা যায়। সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো—-

  • পুরাতন তন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ : অষ্টাদশ লুই-এর শাসনকালে দেশত্যাগী অভিজাত ও যাজকরা দেশে ফিরে আসে এবং তারা বিপ্লবী আমলের সংস্কার বাতিল করে পুনরায় পুরাতনতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা করে। ফলে ফ্রান্সে এক জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
  • অষ্টাদশ লুইয়ের মধ্যপন্থা : অষ্টাদশ লুই একটি সনদ জারি করে যা আইনের চোখে সমান অধিকার। বিপ্লবী যুগের ভূমিসংস্কার প্রভুতি মেনে নিয়ে শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তার ওপর অসন্তুষ্ট হয়।
  • দশম চার্লস-এর উগ্র নীতি : অষ্টাদশ লুই-এর মৃত্যুর পর দশম চার্লস সম্রাট উপাধি ধারণ করে ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন। ঈশ্বর-প্রদত্ত রাজতন্ত্র ও তন্ত্র প্রাধান্য স্থাপনে গির্জার প্রাধান্য স্থাপনে উদ্যোগী হলে ফ্রান্সের জনগণ ক্ষুব্ধ হয়।
  • পলিগন্যাকের অডিন্যান্স : পলিগন্যাক ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ২৬ জুলাই চারটি স্বৈরাচারী অডিন্যান্স জারি করে আইনসভা ভেঙে দেন।

[উপসংহার] উদারপন্থী নেতা এডলফ এর নেতৃত্বে প্যারিসের জনসাধারণ ফেটে পরে এবং জাতীয় রক্ষীবাহিনী তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। অলিয়েন্স বংশীয় লুই ফিলিপকে ফ্রান্সের রাজা বলে ঘোষণা করে।





৫. ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের কারণ লেখো?

-----------------------------------------------------------
-----------------------------------------------------------

[ভূমিকা] ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি বিপ্লব সম্পন্ন হয়। এই ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের বিভিন্ন কারণ লক্ষ করা যায়।

ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের কারণ

  1. লুই ফিলিপের ব্যর্থতা : অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতির প্রয়োগে লুই ফিলিপ ব্যর্থ হলে তার শাসনের প্রতি জনসমর্থনের অভাব দেখা দেয়।
  2. অর্থনৈতিক সংকট : লুই ফিলিপের শাসনকালে ফ্রান্সের অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হয়ে ওঠে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ নানা কারণে শস্যহানির ফলে বাণিজ্য ও শিল্পক্ষেত্রে মন্দা দেখা দেয়। তার ফলে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
  3. শ্রমিকদের ক্ষোভ : ফ্রান্সের মজুরিদের কম বেতন দিয়ে বেশি খাটিয়ে নিত। শ্রমিকরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করার ফলে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। ফলে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
  4. দমন নীতি : শ্রমিক শ্রেণীর উন্নয়নে সরকারের চরম ব্যর্থতার পাশাপাশি জনগণের ভোটাধিকার বৃদ্ধি আন্দোলনকে রাজা লুই ফিলিপ কর্তৃক দমনের চেষ্টা বিপ্লবের প্রেক্ষাপট রচনা করে।

[মূল্যায়ন] অবশেষে দেখা যায় যে শ্রমিকরা রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। প্যারিসের জনসভা ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে তখন লুই ফিলিপ সিংহাসন ত্যাগ করেন এবং ইংল্যান্ডে আশ্রয় নেন। ২৬শে ফেব্রুয়ারি দু’বার প্রজাতন্ত্র ঘোষিত হয়। এইভাবে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পটভূমি গড়ে ওঠে।



৬. বিসমার্কের রক্ত ও লৌহ নীতি বলতে কী বোঝো?


[ভূমিকা] জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ করতে বিসমার্ক যে নীতিটি প্রয়োগ করেছিল সেটি 'রক্ত ও লৌহ নীতি' নামে পরিচিত। তার পাশাপাশি তিনি ছিলেন রাজতন্ত্রের একনিষ্ঠ সমর্থক।

রক্ত ও লৌহ নীতি

এই 'রক্ত ও লৌহ নীতি' সম্পর্কে বিসমার্ক মনে করতেন যে— ১. তিনি মনে করতেন যুদ্ধ ও কঠোর শৃঙ্খলার মাধ্যমে জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার। ২. তিনি ঘোষণা করেন গুরুত্বপূর্ণ কাজ ভোটের দ্বারা হবে না। তা করতে হবে ‘রক্ত ও লৌহ নীতি’ দিয়ে । তিনি যুদ্ধের মাধ্যমে সেই কাজ সম্পন্ন করেন।

  • (1) ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ : দেখা যায় প্রথম যুদ্ধটি ছিল অস্ট্রিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে । এই যুদ্ধে ডেনমার্ক পরাজয় হয়।
  • (2) অস্ট্রিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ : আবার দ্বিতীয় যুদ্ধটি ছিল অস্ট্রিয়ার সঙ্গে স্যাডোয়ার যুদ্ধ । এই যুদ্ধে অস্ট্রিয়া প্রাশিয়ার কাছে পরাজিত হয়।
  • (3) সেডানের যুদ্ধ : আর তৃতীয় যুদ্ধটি ছিল ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সেডানের যুদ্ধ । তৃতীয় নেপোলিয়নের পরাজয় ঘটে এবং জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠা হয়।

[উপসংহার] এই নীতির মাধ্যমে জার্মানি ঐক্যবদ্ধ হয় এবং জাতীয় রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রাশিয়ার রাজা ঐক্যবদ্ধ জার্মানির সম্রাট হিসেবে স্বীকৃত হন এবং জার্মানির চ্যান্সেলার বা প্রধানমন্ত্রী হন বিসমার্ক।





৭. টীকা—ভূমিদাস প্রথার বিলোপ


[ভূমিকা] রাশিয়া ক্রিমিয়ার যুদ্ধে পরাজিত হয়। ফলে জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারের প্রধান কাজ ছিল ভূমিদাস মুক্তি।

ভূমিদাস প্রথা বিলোপের কারণ

রাশিয়ায় ভূমিদাস প্রথা বিলোপের বিভিন্ন কারণ লক্ষ করা যায়। সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো–

  • ১. ভূমিদাস বিদ্রোহ— জার প্রথম নিকোলাসের সময় থেকে ভূমিদাস প্রথার বিলোপের আগে পর্যন্ত সময়ের ভূমিদাস বিদ্রোহ রাশিয়া জেরবার হয়ে উঠেছিল।
  • ২. কর্তৃত্ব হ্রাস— ভূমিদাসদের ওপর অভিজাত ও জমিদারদের আগ্রহ অতিরিক্ত হ্রাস পায়। এবং ভূমিদাস প্রথা তাদের কাছে অলাভজনক হয়ে পড়ে।
  • ৩. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ— সরকারি উদ্যোগে ভূমিদাস প্রথা বিলোপের নীতি গ্রহণ করেন জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার।

ভূমিদাস মুক্তি

১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে 'মুক্তির ঘোষণার' দ্বারা রাশিয়ার ভূমিদাস প্রথার বিলোপ করা হয়। শর্তগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো—

  • ১. জমির মালিকানা লাভের জন্য তাদেরকে অবশ্য ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। 
  • ২. জমিগুলি অবশ্য সোজাসুজি মুক্তিপ্রাপ্ত ভূমিদাসদের দেওয়া হয়নি। কারন 'মির' নামক সমবায় সমিতির সমিতির উপর গ্রামের সকল জমির তত্ত্বাবধানে ভার দেওয়া হয়।

[উপসংহার] ভূমিদাস মুক্তির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এর ফলে জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার 'মুক্তিদাতা জার' নামে পরিচিত হয়। কিন্তু দেখা যায় ভূমিদাসরা মুক্তি পেলেও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পায়নি।



৮. টীকা লেখো—জুলাই রাজতন্ত্র

-----------------------------------------------------------
-----------------------------------------------------------

[ভূমিকা] ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লব সংঘটিত ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে। লুই ফিলিপের নেতৃত্বে ফ্রান্সে প্রতিষ্ঠিত হয় 'জুলাই রাজতন্ত্র' ১৮৩০ - ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে।

বৈশিষ্ট্য

জুলাই রাজতন্ত্রের বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। সেগুলি আলোচনা করা হলো—

  • ১. ফ্রান্সের জনগণের বিশ্বাস ছিল যে, লুই ফিলিপ বিপ্লবের প্রতি সহানুভূতিশীল।
  • ২. জনসাধারণের সমর্থনের উপরেই তার ভবিষ্যৎ নির্ভর করে, লুই ফিলিপও একথা বুঝতেন।

জুলাই রাজতন্ত্রের ব্যর্থতা

জুলাই রাজতন্ত্রের বেশ কয়েকটি ব্যর্থতা লক্ষ করা যায, সেগুলি আলোচনা করা হলো –

  • ১. অবশেষে নানা আদর্শ ও দলে বিভক্ত ফ্রান্সে তার শাসন ব্যবস্থা না ছিল রক্ষণশীল, না ছিল উদারপন্থী, না ছিল নরমপন্থী।
  • ২. দেশের বিভিন্ন শক্তি তার ওপর আস্তে আস্তে আস্থা হারাতে থাকে।

পরিণতি

ফেব্রুয়ারি বিপ্লব শুরু হলে আতঙ্কগ্রস্ত লুই ফিলিপ ১৮৪৮ খ্রি. তার পৌত্রের স্বপক্ষে সিংহাসন ত্যাগ করে ইংল্যান্ডে পালিয়ে যান। ফ্রান্সে জুলাই রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।



৯. জোলভেরাইন সম্বন্ধে লেখো?


[ভূমিকা] জোলভেরাইন নামক জার্মান শুল্কসংঘ নানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

[প্রতিষ্ঠা] ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রাথমিকভাবে জার্মান অর্থনীতিবিদ ম্যাজেনের উদ্যেগে এই শুল্ক সংঘটি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা শুরু হয়। এবং এটি ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে পরিণতি লাভ করে।

[উদ্দেশ্য] জেলভেরাইন এর বেশ কয়েকটি উদ্দেশ্য ছিল সেগুলি হল– অবাধ বাণিজ্যের প্রবর্তন করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা। জার্মান রাজ্যগুলি উন্নতির গঠন করা হয়। সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্য আন্ত:শুল্ক বিলুপ্ত করা।

[কার্যাবলি] বছরের কোন এক সময় শুল্কসংঘের বৈঠক বসতো, এবং নানা সিদ্ধান্ত গৃহীত হতো। এই শুল্কসংঘে সদস্য রাষ্ট্রগুলি বিনাশুল্কে অবাধে ব্যবসা-বাণিজ্য করে খুবই সমৃদ্ধ হতো।

[গুরুত্ব] দেখা যায় জার্মানির ঐক্যের ইতিহাসে জোলভেরাইন-এর গুরুত্ব অপরিসীম। ধীরে ধীরে শিল্পায়ন শুরু হলে জার্মানির শক্তি বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে আর্থিক আদান-প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান ও যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি ঘটে।



১০. এমস টেলিগ্রাম বলতে কী বোঝো?


[পটভূমি] ফ্রান্স ছিল জার্মানির ঐক্যের প্রধান বাধা। ফ্রান্সকে সমস্যায় ফেলার উপায় হিসেবে বিসমার্ক স্পেনের সিংহাসন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করেন। তারই একটি দিক হলো এমস টেলিগ্রাম।

[এমস টেলিগ্রাম]

প্রথম উইলিয়ামের সঙ্গে এমস নামক স্থানে সাক্ষাৎ করেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত বেনিদিতি। প্রথম উইলিয়াম এমস্‌-এর এই আলোচনার কথা ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই জুলাই টেলিগ্রাম মারফত বিসমার্ককে জানান, যা ইতিহাসে এমস টেলিগ্রাম নামে পরিচিত।


[এমস টেলিগ্রাম এর পরিবর্তন]

বিসমার্ক ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধ ঘটানোর ছুঁতো খুঁজেছিলেন। ফরাসিদের ধারণা জন্মায় ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত বেনিদিতি প্রাশিয়ার রাজার দ্বারা অপমানিত ও অপদস্ত হয়েছেন। নেপোলিয়ন ফরাসি রাষ্ট্রদূত বেনিদিতির নিকট এই খবরের সত্যতা যাচাই না করে জনমতের চাপে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৫ জুলাই জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

[ফ্রাঙ্কো - প্রাশিয়ার যুদ্ধ]

অবশেষে বিসমার্কের আশা পূরণ হয়। তারপর ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন সেডানের যুদ্ধে রাশিয়ার কাছে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হন । এবং জার্মানির ঐক্য সম্পন্ন হয় আর তৃতীয় নেপোলিয়ান এই যুদ্ধে বন্দি হন।






১১. মেটারনিক ব্যাবস্থার ব্যর্থতার কারণ কি ছিল?


[ভূমিকা] ফরাসি বিপ্লব দমন করতে এবং প্রাক বৈপ্লবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল তা মেটারনিক ব্যবস্থা নামে পরিচিত। অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স মেটারনিক এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল।



মেটারনিক ব্যবস্থা ব্যর্থতার কারণ

এই মেটারনিক ব্যবস্থা ব্যর্থতার বিভিন্ন কারণ ছিল । সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো—

  1. [দূরদর্শিতার অভাব] মেটারনিক ব্যবস্থা ছিল সাধারণত প্রতিক্রিয়াশীল ও সুবিধাবাদী ও অদূরদর্শী। এর ফলে দমনপীড়ন নীতীর মাধ্যমে তার ব্যবস্থাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পারেননি।
  2. [আন্দোলন দমন] দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ও আন্দোলনকে তিনি বল প্রয়োগের মাধ্যমে দমন করতে সচেষ্ট হয়েছিল বলে জানা যায়।
  3. [প্রগতি বিরোধী] ইউরোপের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রগতির স্রোত রুখে দিয়ে কূটনীতিক হিসাবে তিনি সফল হলেও রাজনীতিবিদ হিসাবে তিনি ব্যর্থ হন।
  4. [ফেব্রুয়ারি বিপ্লব] অস্ট্রিয়া ও জার্মানিতে মেটারনিক ব্যবস্থা ভেঙে চুরমার করে দেয়। ফেব্রুয়ারি বিপ্লব সংগঠিত হয়েছিল ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে।
  5. [অসহযোগিতা] এই মেটারনিক ব্যবস্থাকে ইংল্যান্ড ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে, রাশিয়া ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে এবং ফ্রান্স ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে এই নীতি থেকে সরে যায়।
[উপসংহার] পরিশেষে বলা যায় যে, যতদিন মেটারনিকের হাতে ক্ষমতা ছিল, ততদিন ইউরোপে শান্তি বজায় ছিল। ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের আঘাতে অস্ট্রিয়া ছেড়ে ইংল্যান্ডে পালিয়ে যায় তিনি।







--------------------------------------------

নবম শ্রেণির ইতিহাস



--------------------------------------------
--------------------------------------------









পিডিএফ লিঙ্ক নিচে 





✅ Go Home Now ✅




আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হোন








-------------------------------------------------------------
File Name : নবম শ্রেণির ইতিহাস | ৩য় অধ্যায় উনবিংশ শতকে ইউরোপ  | ব্যাখ্যামূলক ৪ নম্বরের প্রশ্ন
File Format : পিডিএফ

File Language : বাংলা

File Location : গুগল ড্রাইভ

Download Link :  নবম শ্রেণির ইতিহাস | ৩য় অধ্যায় উনবিংশ শতকে ইউরোপ  | ব্যাখ্যামূলক ৪ নম্বরের প্রশ্ন
-------------------------------------------------------------






Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url