Join Telegram Join Facebook বাংলা রচনা
সাহিত্যের ইতিহাস সাজেশান Question-Paper
WBCS স্কুল নোটস ইতিহাস

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্ন উত্তর [মান-৩]


আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি  ব্যাখ্যাধর্মী  প্রশ্ন উত্তর





[ক] ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতা অনুসারে বর্তমান পরিপার্শ্ব প্রসঙ্গে নিজের মতামত ব্যখ্যা করো।

--কবি শঙ্খ ঘোষের 'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতা থেকে প্রশ্নোদ্ভূত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

[] কবিতায় আমাদের চারপাশের যে উল্লেখ রয়েছে, তাতে কবিও একজন সহযাত্রী। প্রাণের বিপন্নতা আধুনিক মানুষের নিত্যসঙ্গী। যুদ্ধ-দাঙ্গা-সন্ত্রাস ও হানাহানিতে মানুষ বিপর্যস্ত। ধস, খাদ, বোমারু এই সবকিছুর প্রতীক হিসেবে আসলে তার জীবনের অস্থির দোদুল্যমানতাকেই প্রকাশ করে। আবার বিচ্ছিন্নতা ও ব্যক্তিসর্বস্বতার কারণে আমরা আজ পথহারা, নিরুপায়। বর্তমান এই অবস্থার কথাই কবি পাঠ্য-কবিতায় ফুটিয়ে তুলেছেন।

 

[] আমাদের ঘর উড়ে যাওয়া বলতে কী বোঝানো হয়েছেঅথবা, 'আমাদের ঘর গেছে উড়ে'— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

--কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতায়, উক্ত প্রসঙ্গের উল্লেখ মেলে।

[] এখানে কবির চোখে, আধুনিক মানুষের বিপন্নতা এবং যুগযন্ত্রণার ছবিটি ধরা পড়েছে। আসলে এই ঘর মানুষের আশ্রয় এবং অস্তিত্বের কথা বলছেকিন্তু সেই আশ্রয় থেকে ক্রমে আমরা বিচ্যুত হয়ে পড়েছি। তাই কেউ যুদ্ধে বা দাঙ্গায় ঘরহারা হয়েছে, আবার কেউ ঘরে থেকেও ছিন্নমূল বা গৃহহীন। এখানে কবির এই ভাবনারই প্রকাশ ঘটেছে।

 

[] আমাদের পথ নেই' বলার কারণ কী?

কবি শঙ্খ ঘোষের 'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতায় বর্তমান প্রসঙ্গের উল্লেখ মেলে। এখানে সময়ের নিদারুণ অভিঘাতে বিপর্যস্ত ও বিভ্রান্ত সাধারণ মানুষের নিরুপায় রূপটি ফুটে উঠেছে।

[] যুদ্ধ-দাঙ্গা-বিপর্যয় ও বিচ্ছিন্নতায় আধুনিক মানুষের মুক্তির সব পথ বন্ধ। ধস, গিরিখাত ও মাথায় বোমারুর নিয়ত আয়োজনে সে সন্ত্রস্ত কোনোক্রমে বেঁচে থাকছে সাধারণ আপামর মানুষ তাদের অসহায়তার জন্যই কবি বলেছেন, আমাদের পথ নেই'

 

[] 'আমাদের শিশুদের শব/ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে। উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য লেখো।

কবি শঙ্খ ঘোষের আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতা থেকে উদ্ধৃত পংক্তি দুটি গৃহীত হয়েছে।

[] হিংসাশ্রয়ী সময়ের বিপন্নতায় আমাদের চারপাশ আজ বিপদসংকুল। এই নারকীয় হানাহানি থেকে শিশুরাও বাদ যায় না। তাই কাছে-দূরে’, যত্রতত্র প্রাণঘাতী হিংসার বলি হিসেবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে শিশুদের মৃতদেহ। যে সমাজ, যে রাষ্ট্র শিশুদের রক্ষা করতে পারে না, যারা নিজেদের অস্ত্র হিসেবে শিশুদের ব্যবহার করে, তারা তো অমানুষ ও কাপুরুষ ভিন্ন আর কিছুই নয়। তাই আমাদেরই অক্ষমতা, আমাদেরই কলঙ্কের প্রতীক চিহ্ন।

 

[] আমরাও তবে এইভাবে/এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?– এ শঙ্কার হেতু কী?

কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকিকবিতা থেকে প্রশ্নোধৃত অংশটি গৃহীত। এখানে কবির এমন শঙ্কার কারণটি অত্যন্ত মর্মগ্রাহী।

[] আমরা আমাদের শিশুদের অস্তিত্ব রক্ষায় অপারগ, যেখানে প্রাণঘাতী হানাহানির অনায়াস শিকার হচ্ছে আমাদের শিশুরা; সেখানে নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নটিও অবান্তর ও অর্থহীন হয়ে ওঠে। কারণ কবি কেবল বেঁচে থাকার দোষে বেঁচে থাকাকে ঘৃণা করেন। তাই এহেন নারকীয় প্রবলের কাছে নতিস্বীকার এক সংবেদনশীল মানুষের কাছে অত্যন্ত যন্ত্রণা ও অনুপাতের বিষয়। পাঠ্য উদ্ধৃতাংশে সেই হতাশা ও অনুশোচনারই প্রকাশ ঘটেছে।


[] আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি এ আমন্ত্রণ কেন?

উদ্ধৃত পক্তিটি কবি শঙ্খ ঘোষের আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকিকবিতা থেকে গৃহীত। কবির ভাষায় বিপন্ন আধুনিক মানুষের অসহায়তা এবং যুগযন্ত্রণার অভিব্যক্তিটি প্রকাশিত হয়েছে। রাষ্ট্র ও সমাজের এক নগ্নরূপ এ কবিতায় দৃশ্যমান৷ ধস-গিরিখাত -বোমারু-শিশুদের শব আসলে আধুনিক সভ্যতার মনুষ্যত্বহীন নরঘাতী বিপর্যয় ও হানাহানির প্রতিভূ। এই বিপদসংকুল পরিপার্শ্বের মধ্যে বাস করে ব্যক্তিমানুষও নিরাশ্রয়, স্বস্থানচ্যুত এবং অস্তিত্বের সংকটে একলা ও অসহায়। আর এখানেই একজন কবির দায়বদ্ধতা। এই অসহায়তা থেকে মুক্তির লক্ষে তিনি = পরস্পর জোট বেঁধে, সংঘবদ্ধ হয়ে একত্রে এগিয়ে চলার আহ্বান মন্ত্র ঘোষণা করেছেন।

 

[] অথবা এমনই ইতিহাস’—উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরকবি শঙ্খ ঘোষের আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকিকবিতা থেকে প্রশ্নোধৃত অংশটি গৃহীত। এখানে কবি ইতিহাসবিস্মৃত হওয়া এক জাতির কথা বলেছেন যেনযারা নিজেদের অতীত ঐতিহ্য ও মূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তাই কবি বলেছেন 'আমাদের ইতিহাস নেই'

[] সনাতন ভারত শান্তির দেশ, মানবতার ধারক। ভারত তার শাস্তিমন্ত্রকে বারবার বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে। এটাই ভারতের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ স্বরূপ। একে ভুলে যাওয়াই ইতিহাস বিস্মৃতি। এ ছাড়াও ইতিহাস বলতে বোঝানো হয়েছে, ইতিহাস বিকৃতি অর্থাৎ আত্মবৈশিষ্ট্য বিস্মৃত হয়ে পরের অনুকরণে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা। এখানে কবির এই ভাবনাই প্রকাশ পেয়েছে।

 

[] আমরা ভিখারি বারোমাসবলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

উত্তরকবি শঙ্খ ঘোষ রচিত আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতায় বর্তমান প্রসঙ্গের উল্লেখ পাই। এখানে কবির চোখে মানুষের বিপন্নতা ও যুগযন্ত্রণার ছবিটি ধরা পড়েছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের নরঘাতী স্বরূপটিকে বুঝেও আজ আমরা নির্বিকারবেঁচে থাকার মুদ্রাদোষে এবং ভয়ে আজ আমাদের চোখমুখ ঢাকা। অর্থাৎ চোখে ঠুলি ও মুখে মুখোশ। আমরা যেন সহ্য করে আর অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে কোনোক্রমে জীবনধারণের ভিক্ষুকদশা গ্রহণ করেছি। আত্মকেন্দ্রিক ও গৃহমুখী মানসিকতাকেই কবি ভিখারির মতো দিন অতিবাহিত করা বলতে চেয়েছেন।

 

[] পৃথিবী হয়তো গেছে মরেএমন সংশয়ের কারণ কী?

উত্তরপ্রশ্নোদ্ভূত প্রসঙ্গটি আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকিকবিতা থেকে গৃহীত৷ কবির ভাবনায় মানবতার পক্ষে চলমানতাই জীবন আর তার বিপরীতে নির্বিকার নিষ্ক্রিয়তা, মৃত্যুরই নামান্তর।

[] মনুষ্যত্বের প্রয়োজনে ও মানুষের কল্যাণের জন্য, সভ্যতা হাজার হাজার বছর ধরে চলমান আজ যেন ক্রমে অকল্যাণের ভিতে থমকে ও আটকে যাচ্ছে সবকিছু। তাই মানুষের ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা জীবনের চলিষ্ণুতা থেকে যেন নিজেদের ক্রমে বিচ্ছিন্ন করে নিচ্ছে। কবি ভাগ্যের হাতে নিজেদের সঁপে দিয়ে, এহেন আপাত শাস্তিকল্যাণে মানবতার কোনো অভিমুখ খুঁজে পান না। এই সামাজিক পরিস্থিতিতে, ব্যক্তিমনের সংশয়াপন্ন ভাবনা থেকেই, কবির উপরোক্ত উচ্চারণ।


[] কিছুই কোথাও যদি নেই'—কবির এমন মনে হচ্ছে কেন?

উত্তর--আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতায় কবি, উপরে উদ্ধৃত বর্তমান প্রসঙ্গটির অবতারণা করেছেন।

[] কবি একজন সমাজমনস্ক ব্যক্তি। তবে বিপন্ন মানুষের অসহায়তা, আত্মকেন্দ্রিকতা ও নিরুপায় একাকিত্ব তাকে সংশয়াপন্ন করে তোলে। কিছুই কোথাও যদি নেই' অর্থাৎ এই বর্বর ও আমানবিক পরিবেশে, আশান্বিত হওয়ার মতো কোনো কিছুর সন্ধান মেলে না, যা অবলম্বন করে ঘুরে দাঁড়ানো যায়। তবুও তিনি হাল ছাড়েন না। যে কয়জন অবশিষ্ট আছে, তাদেরকে একসূত্রে গ্রথিত করে মানবতার জয়গান গাইতে হবে

 

[] আয় আরো হাতে হাত রেখে হাতে হাত রাখার মর্ম কী?

উত্তর--কবি শঙ্খ ঘোষের আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ = কবিতা থেকে উপরোক্ত উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত।

[] এখানে আমরা কবির সমাজসচেতন সত্তার, জাগরুক মনের সন্ধান পাই। বিপন্ন মানবতার এই ঘোর দুর্দিনে, ব্যক্তিসর্বস্ব এই বিচ্ছিন্ন সময়ে, সমাজ ও রাষ্ট্রের নগ্ন-ভয়াবহতার হাত থেকে কবি পরিত্রাণ খুঁজেছেন। আজ আত্মকেন্দ্রিক মানুষ চোখে ঠুলি এঁটে, শুধু নিজেরটুকু নিয়েই ব্যস্ত। সে প্রকৃত ইতিহাস ভুলে অন্যের অনুকরণে এবং আত্মসুখে নিমগ্ন। কিন্তু কবি এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চান। তিনি মানবিকতায়, সাহচর্যে ও যৌথতায়, মানবতার উজ্জীবনে বিশ্বাস করেন। কয়েকজনকে নিয়েই আন্তরিকতায় হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলার অঙ্গীকার করেন।



ক্লাস-১০ এর অন্য লেখা (link)





Go Home (info)




আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হোন

👇👇👇👇


Join Telegram (demo)

Join Facebook (open)

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url