Schoolএকাদশ শ্রেণি

ভাব সম্মিলন কবিতা, বিদ্যাপতি, উৎস ব্যাখ্যা শব্দার্থ প্রশ্ন উত্তর


Last Updated on : November 9, 2024

ভাব সম্মিলন কবিতা : একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার এর পাঠ্য একটি কবিতা হলো বিদ্যাপতি রচিত ‘ভাব সম্মিলন’। এটি ‘ভাবোল্লাস’ পর্যায়ের একতি পদ।

‘ভাব সম্মিলন’ কবিতার উৎস শব্দার্থ ব্যাখ্যা আলোচনা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ‘ভাব সম্মিলন’ কবিতা থেকে প্রশ্নোত্তর আলোচনা করা হয়েছে।

ভাব সম্মিলন কবিতা, বিদ্যাপতি, একাদশ শ্রেণি দ্বিতীয় সেমিস্টার

ভাব সম্মিলন কবিতা, বিদ্যাপতি, উৎস ব্যাখ্যা শব্দার্থ প্রশ্ন উত্তর


কবিতা আলোচনা

ভাবসম্মিলন

বিদ্যাপতি

প্রাক আধুনিক বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধ অংশই জুড়ে রয়েছে বৈষ্ণব সাহিত্য, যা বৈষ্ণব পদাবলিকে আশ্রয় করে গড়ে উঠেছে। চৈতন্য-পূর্ব যুগের বৈষ্ণব পদ রচয়িতার মধ্যে দুজনের নামোল্লেখ করতে হয়, তাঁরা চণ্ডীদাস ও বিদ্যাপতি। মৈথিলি কবি বিদ্যাপতির পদ বাংলা সাহিত্যের সম্পদ রূপে গণ্য হয়। ভাব সম্মিলন পর্যায়ের একটি পদ বা কবিতা একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমেস্টারে সংকলিত হয়েছে “সাহিত্যানুশীলন” বইয়ে।

ভাব সম্মিলন কবিতার উৎস

  • কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত “বৈষ্ণব পদাবলী” সংকলন।
  • এছাড়াও আরো কয়েকটি বৈষ্ণব পদ সংকলন বৈষ্ণব পদ সংকলন গ্রন্থে এই কবিতাটি সংকলিত হয়েছে।

ভাব সম্মিলন কবিতা কোন পর্যায়ের

-------------------------------------------------------
-------------------------------------------------------


-------------------------------------------------------
-------------------------------------------------------
  • কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত “বৈষ্ণব পদাবলী” সংকলন গ্রন্থে কবিতাটি “ভাবোল্লাস ও মিলন” পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
  • তবে শিক্ষাসংসদের পাঠ্য অনুযায়ী এটি “ভাব সম্মিলন পর্যায়ের। যদিও উভয়েই একার্থে প্রযোজ্য হয়েছে।

কবি বিদ্যাপতি পরিচয়

চৈতব্য-পূর্ব সময়ের বৈষ্ণব কবি। ইনি মিথিলার রাজসভার কবি ছিলেন। সংস্কত ও মৈথিলী ভাষায় বিদ্যাপতি কিছু গ্রন্থ ও গীতিকবিতা লিখেছেন। বাংলায় প্রচলিত তাঁর নামাঙ্কিত অধিকাংশ বৈষ্ণব পদ্গুলি আসলে ব্রজবুলিতে রচিত। আলোচ্য কবিতাটিও তাঁর ব্রজবুলিতে রচিত একটি পদ। ইনি শিবসিংহ সহ কয়েকজন রাজার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিলেন। 

আরো পড়ুন :  বিদ্যাপতির ভাব সম্মিলন কবিতার উৎস, পর্যায়, সারাংশ, শব্দার্থ, মূলসুর

ভাব সম্মিলন কবিতার উৎস

  • কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত “বৈষ্ণব পদাবলী” সংকলন।
  • এছাড়াও আরো কয়েকটি বৈষ্ণব পদ সংকলন বৈষ্ণব পদ সংকলন গ্রন্থে এই কবিতাটি সংকলিত হয়েছে।

ভাব সম্মিলন কবিতার পর্যায়

  • কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত “বৈষ্ণব পদাবলী” সংকলন গ্রন্থে কবিতাটি “ভাবোল্লাস ও মিলন” পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
  • তবে শিক্ষাসংসদের পাঠ্য অনুযায়ী এটি “ভাব সম্মিলন পর্যায়ের। যদিও উভয়েই একার্থে প্রযোজ্য হয়েছে।

ভাব সম্মিলন কবিতার সারাংশ

শ্রীরাধিকা তাঁর সখীকে জানাচ্ছেন : 

  • হে সখি, আমার সীমাহীন আনন্দের কথা কী আর বলব; চিরকাল মাধব শ্রীকৃষ্ণ আমার হৃদয়-মন্দিরে থাকবেন।
  • পাপী চন্দ্রকিরণ আমাকে যত না কষ্ট দিয়েছে, প্রিয় মাধবের মুখ দর্শনে আমি ততটাই সুখ পেয়েছি।
  • যদি কেউ আঁচল ভরে মহামূল্যবান রত্নও দেয়, তবুও আমি প্রিয়তমকে দূর দেশে পাঠাবো না।
  • প্রিয় আমার শীতের ওড়না, গ্রীষ্মের বাতাস, বর্ষার ছাতা, উত্তাল নদীর নৌকো মতো।
  • বিদ্যাপতি বলেন, শুন ওহে বরনারী রাধিকা, যে হয় সুজন বা সৌভাগ্যবতী তাঁর দুঃখ চিরকালের নয় বরং স্বল্পকালের।

ভাব সম্মিলন কবিতার শব্দার্থ

  • কহব = বলব
  • সখি = সখী শব্দের সম্বোধন; বন্ধু, সহচরী
  • ওর = সীমা-পরিসীমা (ব্রজবুলি শব্দ)
  • চিরদিন = চিরকাল
  • মাধব = শ্রীকৃষ্ণ
  • মন্দির = কবিতায় ‘গৃহ’ অর্থে
  • মোর = আমার
  • সুধাকর = চাঁদের আলো, জ্যোৎস্না (সুধা কথার অর্থ চাঁদ)
  • দুখ = দুঃখ
  • দেল = দিল (ব্রজবুলি শব্দ)
  • পিয়া = প্রিয় (এখানে কৃষ্ণ)
  • দরশন = দর্শন (স্বরভক্তি ঘটেছে)
  • ভেল = হলো (ব্রজবুলি শব্দ)
  • আঁচর = অঞ্চল, আঁচল, শাড়ির প্রান্ত
  • মহানিধি = মহামূল্যবান সম্পদ বা ধন
  • তব = তবুও
  • হাম = আমি
  • ওঢ়নী = ওড়না, গায়ের আবরণ
  • গীরিষের = গ্রীষ্মের (গ্রীষ্ম > গীরিষ)
  • বা = বায়ু, বাতাস
  • বরিষার = বর্ষাকালের (বর্ষা > বরিষা)
  • ছত্র = ছাতা
  • দরিয়া = নদী বা সমুদ্র
  • ভণয়ে = বলছে, বলে
  • শুন = শোনো
  • বরনারি = সুন্দরী (এখানে রাধিকার সম্বোধনসূচক শব্দ)
  • সুজনক = সৌভাগ্যবতীকে
  • দুখ দিবস = দুঃখের দিন
  • দুই-চারি = দু-চার দিনের
আরো পড়ুন :  ১২টি বড়ো প্রশ্ন রচনাধর্মী প্রশ্ন বাসন্তিকস্বপ্নম্ | দ্বাদশ শ্রেণি সংস্কৃত | Basantika Swapnam Class 12 | Long Question Answer | PDF Download

ভাব সম্মিলন কবিতার মূলসুর

শ্রীকৃষ্ণ মথুরায় গমন করলে শুরু হয় রাধিকার বিরহ। এই বিরহ ও বিকারের আবেশে রাধা কল্পনার মাধ্যমে কৃষ্ণের সঙ্গ-সুখ উপভোগ করছেন – একেই ভাব সম্মিলন বা ভাবোল্লাস নাম দেওয়া হয়েছে। বিদ্যাপতির এই পদ বা কবিতাটিতেও বিরহে কাতর রাধাও যেন স্বপ্নে কিংবা কল্পনায় শ্রীকৃষ্ণের দেখা পেয়েছেন; তাই তাঁকে আর ছেড়ে দিতে চান না। অর্থাৎ এই পর্যায়ের কবিতাও প্রকান্তরে বিরহেরই কবিতা। ভাবসম্মিলন বা ভাবোল্লাস পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি হলেন বিদ্যাপতি। এই ভাবসম্মিলন বা ভাবোল্লাস পর্যায়ের আরও কয়েকটি কবিতা এখানে দেওয়া হলো :

  1. পিয়া যব আওব এ মঝু গেহে (বিদ্যাপতি)
  2. আজু রজনী হাম ভাগে পোহায়লুঁ (বিদ্যাপতি)
  3. সই, জানি কুদিন সুদিন ভেল (চণ্ডীদাস)
  4. বহুদিন পরে বঁধুয়া এলে (চণ্ডীদাস)
  5. পহিলহি রাধামাধব মেলি (গোবিন্দদাস)
  6. অচিরে পূরব আশ / বন্ধুয়া মিলিবে পাশ (জ্ঞানদাস)

প্রশ্ন আলোচনা

প্রশ্নের ক্লিক করে উত্তর দেখে নাও

১. ভাব সম্মিলন কাকে বলে? আলোচ্য ‘ভাব সম্মিলন’ পদটিতে রাধার যে আনন্দের চিত্র ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় লেখো। ২+৩

২. গীতিকবিতার সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে ‘ভাব সম্মিলন’ কবিতাটিকে সার্থক গীতিকবিতা বলা যায় কিনা তা সংক্ষেপে লেখো। ২+৩ 

৩. “কি কহব রে সখি আনন্দ ওর” – কথাটি কে, কার উদ্দেশে বলেছেন? বক্তার এমন আনন্দের কারণ কী?

৪. “পাপ সুধাকর যত দুঃখ দেল” – সুধাকর কে এবং তাকে পাপী বলা হয়েছে কেন? রাধার দুঃখ দূর হলো কীভাবে?

৫. “আঁচর ভরিয়া যদি মহানিধি পাই / তব হাম পিয়া দূর দেশে না পাঠাই” – আঁচর ও মহানিধি শব্দদুটির অর্থ কী? উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য লেখ।

৬. “শীতের ওঢ়নী পিয়া গীরিষির বা / বরিষার ছত্র পিয়া দরিয়ার না” – উপমাগুলি কোন অর্থে, কাকে উদ্দেশ্য করে ব্যবহৃত হয়েছে? উপমা ব্যবহারের তাৎপর্য লেখো।

৭. “ভণয়ে বিদ্যাপতি” – বিদ্যাপতির পরিচয় দাও। কবি কাকে কী উপদেশ কেন দিয়েছেন তা লেখো।

৮. “সুজনক দুখ দিবস দুই-চারি” – কে, কাকে এমন বলেছেন? মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।


ভাব সম্মিলন সংক্রান্ত অন্য লেখা

আরো পড়ুন :  তাতল সৈকত বারি বিন্দুসম, বিদ্যাপতি, নিবেদন


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: সংরক্ষিত !!