৭টি বড়ো প্রশ্ন রচনাধর্মী প্রশ্ন ভারতবর্ষ গল্প সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ | দ্বাদশ শ্রেণি | Bharatbarsa | Long Question Answer | PDF Download
Last Updated on : June 7, 2024
৭টি বড়ো প্রশ্ন রচনাধর্মী প্রশ্ন ভারতবর্ষ গল্প সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ | দ্বাদশ শ্রেণি | Bharatbarsa | Long Question Answer | PDF Download
যে যে প্রশ্নের উত্তর আছে(toc)
[১] “বুড়ির শরীর উজ্জ্বল রোদে তপ্ত বালিতে চিত হয়ে পড়ে রইল।“—বুড়ির চেহারা ও পোশাকের পরিচয় দাও। তার তপ্ত বালিতে পড়ে থাকার কারণ কী ? [২০১৭]
[উ]
দ্বিতীয় অংশের উত্তর—
ক্রমে ভিড় বেড়ে যায়। কেউ ভাবে শেয়াল-কুকুরে ছিঁড়ে খাবে, গন্ধে টেকা যাবে না। কেউ কপাল ছুঁয়ে দেখে প্রচণ্ড ঠান্ডা, নাড়ির স্পন্দন নেই। গ্রামের চৌকিদার গ্রামবাসীদের পরামর্শ দেয়—“লদীতে ফেলে দিয়ে এসো। ঠিক গতি হয়ে যাবে-যা হবার!” বিজ্ঞ চৌকিদারের পরামর্শ মেনে বাঁশের চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে বুড়ির দেহ ফেলে আসা হয় নদীর চড়ায়।
গল্পের এই অংশটি মানুষের অমানবিকতাকেই ফুটিয়ে তোলে। গ্রামবাসীরা বুড়ি মারা গেছে জেনেও তার দেহ সৎকার না করে নদীর চড়ায় ফেলে দিয়ে আসে। মানুষের এই নির্দয় আচরণেই দেহ তপ্ত বালিতে পড়ে থাকে।
[২] “বিজ্ঞ চৌকিদারের পরামর্শ মানা হল”—চৌকিদার কী পরামর্শ দিয়েছিল? সেই পরামর্শ মেনে কী করা হয়েছিল ?
[উ]
দ্বিতীয় অংশ—
[৩] “সময়টা ছিল শীতের”—রাঢ়বাংলার শীতের যে বর্ণনা লেখক দিয়েছেন, তা গল্প অনুসরণে লেখ।
[উ]
কয়েকটি গ্রামের কেন্দ্রে অবস্থিত বাজারের উত্তরে যে বিশাল মাঠ, সেখান থেকে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে আসে সারাক্ষণ। এমন শীতেও মাঝে মাঝে দুর্যোগ উপস্থিত হয়। শীতের মেঘলা আকাশ থেকে শুরু হয় বৃষ্টি, এর ফলে শীত আরো তীব্র হয়। ভদ্রলোকের ভাষায় একে বলে ‘পউষে বাদলা’ ছোটোলোকে বলে ‘ডাওর’ । আবার এমন বর্ষণমুখর শীতের দিনে ঝড় শুরু হলে তাকে বলে ‘ফাপি’।
এই বিরূপ পরিস্থিতিতে পৌষ মাসে যখন ‘ফাঁপি’ আসে, তখনও মানুষের সব ধান মাঠে পড়ে। দুশ্চিন্তায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মানুষের মন। একটু উত্তাপ পাওয়ার জন্য গ্রামের মানুষ তখন এসে জড়ো হয় চায়ের দোকানে, ভিড় ও আড্ডা জমায়।
এই আড্ডার কারণ হল সময় কাটানো, ক্ষিপ্ত মেজাজের উপশম প্রচেষ্টা। চলে তর্কবিতর্ক, যার কোনো প্রসঙ্গ-অপ্রসঙ্গ নেই। দোকানকে কেন্দ্র করে মজলিশ ভালো জমে ওঠে। বাজারের ছোটো সীমার মধ্যে যে ক-টি চায়ের দোকান, গ্রাম-গঞ্জ থেকে একে একে সেখানে লোকসমাগম হয়। কথার ভিড়ে আত্মপ্রকাশ করে মুম্বইয়ের অভিনেতা-অভিনেত্রী কিংবা গায়ক, কখনও ইন্দিরা গান্ধি, আবার কখনও মুখ্যমন্ত্রী কিংবা এমএলএ। এক-একসময় আসে সরা বাউরির প্রসঙ্গও। কথা কাটাকাটির জের যত বাড়ে, চা-ওয়ালার বিক্রিবাটাও তত বাড়ে। ধারের পরিমাণও বাড়তে থাকে। চা-ওয়ালার বাকি দিয়ে কৃপণতা করে না, কারণ সে জানে—পৌষ মাস ধানের মরশুম, ‘আজ না হোক, কাল পয়সা পাবেই।‘ এরূপ মজলিশের দিনেই গল্পের ভিখিরি বুড়ির আগমন ঘটেছিল।
[৪] ‘বচসা বেড়ে গেল’ – বচসার কারণ কী? এই বচসা কীভাবে সমাপ্ত হয়েছিল তার বিবরণ দাও। [অথবা] ‘দেখতে দেখতে প্রচন্ড উত্তেজনা ছড়াল চারিদিকে’—প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আলোচ্য ঘটনার বিবরণ দাও।
[উ]
দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পরের দিন গ্রামবাসীরা আবিষ্কার করে বুড়ির নিঃসাড় দেহ এবং সকলে ভেবে নেয় যে সে মৃত। তার দেহকে হিন্দুরা চৌকিদারের পরামর্শে, বাঁশের চ্যাংদোলায় করে নদীর শুকনো চড়ায় ফেলে দিয়ে আসে। ওইদিনই বিকেলে কিছু মুসলমান ওই একই চ্যাংদোলায় দেহটিকে আবার বাজারে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। তাদের বক্তব্য বুড়ি মুসলমান, তাকে কবর দিতে হবে। এই নিয়ে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘাত বেধে যায়।
দ্বিতীয় অংশ—
ক্রমে বচসা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠতে থাকে। উত্তেজনাপুর্ণ পরিবেশে দোকানের ঝাঁপ বন্ধ হতে থাকে ক্রমশ। দুই সশস্ত্র জনতার মাঝে চৌকিদার নিজেকে বিপন্নবোধ করে। অবশেষে মৃতকল্প বুড়ি উঠে বসলে জনতা অবাক হয়ে যায়। বৃদ্ধার কথায় জনতা বুঝতে পারে সাম্প্রদায়িক ধর্মই নয়, মানবধর্মই বড়।
[৫] “আমি কী তা দেখতে পাচ্ছিস নে?”—কোন্ প্রশ্নের উত্তরে বক্তা এ কথা বলেছেন? গল্পানুসারে বক্তব্যের মূলভাব লেখ।
[উ]
বক্তব্যের মূলভাব—
বৃদ্ধার মুখের ব্যঙ্গমিশ্রিত ও জিজ্ঞাসাসূচক কথাগুলি আসলে লেখকের। তিনি বলতে চেয়েছেন, মানুষ মানুষই। সম্প্রদায় বা ধর্মগত স্বরূপ-পরিচয় ততটা মূল্যবান নয়। হিন্দু, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো ধর্ম নয়, মানুষের আসল পরিচয় সে মানুষ। মানবিকতাই তার ধর্ম। তাই মানুষ পরিচয়টিকেই জীবনে প্রধান মূল্য দেওয়া উচিত।
[৬] “শেষ রোদের আলোয় সে দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল।“—কার কথা বলা হয়েছে? সে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল কেন? [২০১৫]
[উ]
বক্তব্য—
দ্বন্দ্ব যখন চরম সীমায় পৌঁছেছে তখনই লেখক বুড়িকে পুনর্জাগরিত করেন। শুধু তাই নয়—দুই লড়াকু সম্প্রদায়ের নির্বোধ মানুষজনদের কৌতূহলী জিজ্ঞাসার উপর নির্ভীক বুড়ির চলে যাওয়া দেখান। এর মধ্যে দিয়ে লেখক প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের অসারতার প্রতি তীব্র অবজ্ঞা ছুঁড়ে দিয়েছেন লেখক। মানুষ মানবতা ধারণ করুক—এই লেখকের প্রত্যাশা। তথাকথিত ধার্মিকজন জীবিত, বিপন্ন মানুষকে বাঁচার প্রেরণা দেয় না। কিন্তু মৃত মানুষের ধর্মপ্রমাণে সশস্ত্র হয়ে লড়াই করে। তাই বুড়ির ‘দূরের দিকে ক্রমশ আবছা’ হয়ে যাওয়া যেন মানুষের মানবিক সত্তার, নৈতিকতার অবনমনকেই উপস্থাপিত করে।
[৭] বুড়িকে কেন্দ্র করে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সূচনা হয়েছিল তার পরিচয় দাও। বুড়ি পুনরায় বেঁচে ওঠার মাধ্যমে কী শিক্ষা দিয়েছিল তা লেখ।
[উ]
বলাবাহুল্য, হিন্দু লোকজন সকালে এই মৃতদেহ ফেলে আসে এবং বিকেলে মুসলমানপাড়ার মানুষজন আবার তাকে বাজারে ফিরিয়ে এনে দাবি করে সে মুসলমান। বুড়ির মৃতকল্প দেহকে নিয়ে এরপর বাজারে প্রবল উত্তেজনা ও যুক্তি-প্রতিযুক্তির চাপানউতোর শুরু হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে যারা চা-দোকানে জড়ো হয়েছিল তারাই তখন একদিকে মোল্লাসাহেব এবং অন্যদিকে ভটচাজমশাইকে নিয়ে বুড়ির মৃতদেহ অধিকারে সচেষ্ট হয়। বুড়ি ধর্ম পরিচয় প্রমাণে অনিবার্যভাবে এসে পড়ে তাদের মিথ্যেকথা। লেখক এখানে ভারতের ধর্মীয় সংকীর্ণতার রূপটিকে উন্মোচিত করেছেন।
মোল্লাসাহেব ও ভটচাজমশাই যে উত্তেজনার পত্তন করেন, তা ক্রমে ধর্মীয় মানুষদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তারপর দেখা যায় লোকেরা বুড়ির মড়াবাঁধা চ্যাংদোলাটা নিয়ে টানাটানি করছে, মানুষের হাতে উঠে এসেছে মারাত্মক সব অস্ত্রশস্ত্র। একসময় দেখা যায় মোল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাই নিজ নিজ সম্প্রদায়ের মানুষদের উত্তেজিত করে তুলছেন। এবং এই ধুন্ধুমার গর্জন-প্রতিগর্জনের মধ্যে দাঁড়িয়ে সরকারি প্রতিনিধি চৌকিদার অবস্থা সামাল দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছে।
দ্বিতীয় অংশ—
——————————-
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা থেকে অন্য প্রশ্ন
————————
ক্লাস ১২ এর অন্যান্য বিষয়ের লেখ
—————————
PDF Download Link নিচে
————————
আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হোন
👇👇👇👇
———————
———————-
Thanks