Schoolএকাদশ শ্রেণি

নুন কবিতা প্রশ্ন উত্তর, Class 11 2nd Semester, DQ


Last Updated on : October 23, 2024

নুন কবিতা প্রশ্ন উত্তর : কবি জয় গোস্বামীর নুন কবিতার প্রশ্ন উত্তর। একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিস্টারের কবিতা। Class 11 2nd Semester

জয় গোস্বামীর নুন কবিতা প্রশ্ন উত্তর, Class 11 2nd Semester, DQ


আলোচিত পয়েন্ট

প্রশ্ন: “আমি তার মাথায় চড়ি”—কে, কার মাথায় চড়ে? পঙ্‌ক্তিটির তাৎপর্য লেখ। ২০১৫

কে, কার মাথায় চড়ে

‘ভুতুমভগবান’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘নুন’ কবিতায় ‘আমি’ হলেন শ্রমজীবী বঞ্চিত মানুষজন। সারাদিন কর্মে, ক্লান্তিতে অতিবাহিত করার পর অভুক্ত শরীর চায় বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় খাদ্য। সেই সামান্য খাদ্য না পেয়ে অপ্রাপ্তির যন্ত্রণায় বক্তা ‘রাগ’ এর মাথায় চড়েন। একে অপরের মাথায় চড়ার কথা এখানে বলা হয়েছে।

তাৎপর্য

সমাজমনস্ক কবি জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতার কথক প্রকৃতপক্ষে সমস্ত নিম্নবিত্ত, শ্রমজীবী, ক্ষুধার্ত মানুষের প্রতিনিধি। নিত্য অভাব, স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা, প্রায়-দিন অর্ধাহার—অনাহারে থাকা এই সব অভাবী মানুষের প্রতিদিনের রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবু এরা যেহেতু ‘অল্পে খুশি’ সেহেতু ‘সাধারণ ভাত-কাপড়ে’ দিন কাটলেই তাদের আনন্দ।

কিন্তু সমস্যা হলো আমন দিনও থাকে যে দিন খাদ্যাভাবে, অর্থাভাবে একসময় অচল হয়ে পড়ে। তাই ক্ষুধিত মানুষের জীবন-যন্ত্রণা থেকে হতাশা, ক্রোধ ও অশান্তির আগুন একসময় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। সেই প্রসঙ্গে কবি লিখেছেন— ‘রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি।’


প্রশ্ন: “আমরা তো অল্পে খুশি”—‘অল্পে খুশি’ মানুষদের যে জীবন চিত্র কবিতায় ফুটে উঠেছে, তার পরিচয় দাও। ২০১৬ [অথবা] ‘নুন’ কবিতায় প্রকাশিত নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষের জীবনকথা নিজের ভাষায় লেখ ।

জীবনচিত্র

আধুনিক কবিতা-চর্চায় কবি জয় গোস্বামী নিঃসন্দেহে মাইলস্টোন। ‘নুন’ কবিতাটি নিম্নবিত্ত পরিবারের নিত্য অভাবের কাহিনি। সাধারণ ভাত-কাপড়ের সন্ধানে নিম্নবিত্ত মানুষের দিন চলে। অধিকাংশ দিন না খেয়েই তাদের কাটাতে হয়। জীবন থেকে নির্বাসিত হয় সুখ-স্বস্তি-শান্তির সঙ্গে পরিচিত শব্দগুলি।

পিতা-পুত্র অভাবী সংসারে কোনো রকমে দিন-যাপন করে। তারা ‘অল্পে খুশি’। কবিতার প্রথমেই উঠে আসে এমন বক্তব্য : “আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাত কাপড়ে”। সবদিন ঠিকমতো বাজার হয় না । এমনকি কোনো কোনো দিন অতিবাহিত হয় অসুখে, ধার-দেনাতে। যেদিন অর্থাগম হয়, সেদিন “বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি গোলাপচারা”। কিন্তু সেখানেও আছে সংকটের অন্য ইতিহাস। কেননা, “পুঁতবো কোথায় ?” সুতরাং, স্বপ্নপূরণ না হলে “টান দিই গঞ্জিকাতে”।

আরো পড়ুন :  রূপনারানের কূলে [রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর] কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণি, Rupnaraner Kule, Class 12 Higher Secondary, Descriptive Long Questions & Answers

তাদের জীবনে অধিক কোনো স্বপ্ন নেই। কিন্তু সারাদিন কাজ করে ফেরার পর তারা দেখে “নুন নেই ঠান্ডা ভাতে”। তখন তাদের যন্ত্রণার রূপ পায় এইভাবে—

‘রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি

বাপব্যাটা দু-ভাই মিলে সারাপাড়া মাথায় করি’।

অবশ্য এতে অন্য কারও যায় আসে না। কেননা, তাদের এই না খাওয়ার কাহিনি নিয়ে কারও মাথা ব্যথা নেই।

শেষকথা

কবি জয় গোস্বামী নিম্নবিত্তের এই হতাশাকে সামনে রেখে উচ্চারণ করেন— “আমরা তো সামান্য লোক”। সুতরাং, অন্তত “আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক”। এভাবে বক্তার জীবন চরিত্রের বাস্তবরূপ ধরা পড়েছে ‘নুন’ কবিতায়।


প্রশ্ন: “আমরা তো সামান্য লোক”—কে কোন্‌ প্রসঙ্গে এ কথা বলেছে? ‘সামান্য লোক’ শব্দের তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর। ২০১৮

বক্তা

সত্তর দশকের জনপ্রিয় কবি জয় গোস্বামীর ‘ভুতুমভগবান’ কাব্যের ‘নুন’ কবিতা থেকে গৃহীত এই অংশে কথক এই কথাটি বলেছেন কবিতার শেষাংশে এসে।

প্রসঙ্গ

ঔপনিবেশিকতার শিকল ছিন্ন করে আমরা স্বাধীনতা লাভ করলেও দেশের অধিকাংশ মানুষ আর্থিকভাবে অসহায়। তাদের খাওয়ার পাতে সামান্য নুনটুকুও জোটে না। সেই প্রসঙ্গে এই উক্তি।

সামান্য লোক শব্দের তাৎপর্য

খাদ্যাভাব, অর্থাভাব, ক্ষুধার্ত মানুষের অসহায়তায় কীভাবে সামাজিক বৈষম্য ও বিপন্নতা চরমে উঠেছিল তারই সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ হলো ‘নুন’ কবিতাটি। একদিকে ভোগ-বিলাস-জৌলুষ ঠিক তার বিপরীত দিকে ক্ষুধিত মানুষের খাদ্যের প্রতীক্ষা। এমন এক অস্থির সময়পর্বে দাঁড়িয়ে কবি দেখেছেন সমাজের অধিকাংশ মানুষের অসহায় অবস্থা।

বেকারত্ব বৃদ্ধি, প্রয়োজনের কর্মসংস্থান না হওয়া, মাত্রা ছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফল হলো ‘সামান্য লোক’দের বেশির ভাগে উপবাসী থাকা।

এদিক থেকে ‘সামান্য লোক’ শব্দের অর্থ আর সীমায়িত থাকে না। যারা রাষ্ট্রযন্ত্রের মূল শক্তি, যারা সভ্যতার প্রকৃত ধারক ও বাহক, যাদের তিল তিল শক্তিতে সভ্যতার রথচক্র সচল; তারাই চিহ্নিত হয়েছেন ‘সামান্য লোক’ নামে।


প্রশ্ন: “মাঝে মাঝে চলেও না দিন”—কার মাঝে মাঝে দিন চলে না? দিন না চলার কারণ কী? এর মাধ্যমে নিম্নবিত্ত মানুষের  জীবনযাত্রার মাঝে যে ছবি পাওয়া যায় তা লেখ। ২০২০

প্রথম অংশ

১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয় কবি জয় গোস্বামীর ‘ভুতুমভগবান’ কাব্যগ্রন্থটি। এই কাব্যের ‘নুন’ কবিতায় উল্লিখিত অংশে কথক যে নিম্নবিত্ত সমাজের প্রতিনিধি তাদের দিনযাপন হয় খুব কষ্টে।

দ্বিতীয় অংশ

মাঝে-মধ্যে কাজের অভাবে এমন অর্থাভাব ও অন্নাভাব দেখা যায় যে, দিন আর চলতে চায় না।

তৃতীয় অংশ

‘অল্পে খুশি’ সাধারণ শ্রমজীবী মানুষদের ঘরে যখন খেতে না পাওয়াটাই রুটিন হয়ে দাঁড়ায়, তখন কবি উচ্চারণ করেন— ‘মাঝে মাঝে চলেও না দিন’।

সারাদিনের পর ক্লান্ত, শ্রান্ত দেহে বাপ-ব্যাটা বাড়ি ফেরে। কিন্তু তাদের খাবারের আয়োজন থাকে না। পড়শিদের বিলাসবহুল জীবনের পাশে তারা যেন অসহায়, অনাহারী জীবের মতো।

রাত দুপুরে যখন তারা খাওয়ার সুযোগ পায়; তখন তাদের ঠান্ডা ভাতে নুনটুকুও জোটে না। তারা সামান্য নুনটুকু পাবে না কেন? এই আত্মক্ষয়ী জীবন জিজ্ঞাসা থেকে সারা পাড়া চীৎকার করে মাথায় তোলে।

আরো পড়ুন :  অভিষেক কবিতার MCQ SAQ 120+ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর, দশম শ্রেণি

যদিও তাদের সেই চিৎকারে কারও কিছু যায় আসে না। কেননা, আর্থিকভাবে যারা স্বচ্ছল, তারা কখনই দরিদ্রের দুঃখ বোঝে না। কবি জয় গোস্বামী ‘নুন’ কবিতার শেষাংশে লিখেছেন—

‘আমরা তো সামান্য লোক

আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।’

এভাবে ‘নুন’ কবিতা হয়ে ওঠে হা-অন্ন মানুষের জীবন-যন্ত্রণার প্রতিচ্ছবি।


প্রশ্ন: ‘নুন’ কবিতার নামকরণের সার্থকতা আলোচনা কর।

নামকরণ

সরাসরি বিষয়ভাবনার মধ্যে প্রবেশ করে কবি জয় গোস্বামী ‘নুন’ কবিতার নামকরণকে করেছেন একটি বিশেষ সময়ের বঞ্চিত শ্রেণির পরিচায়ক।

এক। জীবন-সংগ্রামের নেপথ্য ভূমিকা

কবিতার শুরুতেই সমকালীন বঞ্চিত শোষিত শ্রেণির মানুষের মানসিক অবস্থা ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে তাদের নিরন্তর সংগ্রামকে তুলে ধরার জন্যেই জয় গোস্বামী প্রথমেই বলে নিয়েছেন–‘আমরা তো অল্পে খুশি’।

দুই৷ বঞ্চনার শত ইতিহাস

দীন-দরিদ্র মানুষ বিলাসিতা করতে পারে না। শুকনো ভাতে সামান্য লবণটুকুই তাদের একমাত্র প্রত্যাশা। ভাত-কাপড়ে সাধারণভাবে দিন চলে গেলেই তো তারা খুশি।

তিন। সাধের স্বপ্ন

সবদিন যাদের বাজার করা সাধ্যের অতীত হয়ে দাঁড়িয়েছিল; তাদের মনে তখন শেষ প্রদীপের আলোর মতো টিকে ছিল সাধের স্বপ্নটুকু। আর এজন্যে বাড়িতে ফেরার পথে গোলাপচারা কিনে আনত।

চার। প্রবল সংশয়

‘গোলাপচারা’ এখানে সময়ের সংকট থেকে বেরিয়ে প্রতীকে পরিণত হয়। তাছাড়া এই সংশয় মনে জায়গা করে নেয়—‘ফুল কি হবেই তাতে?’ এসব কথার সঙ্গত উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না যখন, ঠিক তখনই ‘বাপব্যাটা দু-ভাই’ মিলে টান দেয় গঞ্জিকাতে।

পাঁচ। বেঁচে থাকার প্রত্যাশা

গঞ্জিকা যেন এখানে সব যন্ত্রণা ভুলে থাকার অব্যর্থ নিশানা। ফলে ‘আমরা’ নামে চিহ্নিত সময়ের মানুষজন শুধুমাত্র নুনের প্রত্যাশায় বসে থাকে। বেঁচে থাকা যখন একমাত্র আকাঙ্ক্ষা তখন ঠান্ডা ভাতের জন্যে শুধু নুনটুকুই তো যথেষ্ট।

ছয়। একমাত্র প্রত্যাশা

ঠান্ডা ভাতে নুনের দাবি জানানোর মধ্যে কোনো বিলাসিতা নেই। সামান্য লোক হলেও অতিসামান্য নুনটুকু কেন শুকনো ভাতে জোটে না। তাই এই দাবি জানিয়ে কবিতা শেষ হয়—‘আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক’।

এখানে এই ‘লবণের ব্যবস্থা’ নিম্নবিত্ত পরিবারের কাছে একমাত্র প্রত্যাশা। আর এই প্রত্যাশাটুকু মিথ্যা নয়। এদিক থেকে ‘নুন’ কবিতাটি বিশেষ তাৎপর্যে যথাযথ সুচিন্তিত নামকরণের মর্যাদা পায়।


প্রশ্ন: শ্রমজীবী বঞ্চিত মানুষের জীবনযন্ত্রণা ‘নুন’ কবিতায় যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা সংক্ষেপে লেখো।

এক অস্থির সময়কালে যখন হাজারতর বিপন্নতার ঝড়ো বাতাস মানুষের স্বপ্নকে কেড়ে নিয়েছে, তখন ‘নুন’ কবিতাটি লিখেছেন কবি জয় গোস্বামী।

সময়ের অভিজ্ঞতা ও আশ্চর্য অনুভূতির মিশ্রণে প্রকাশিত হয়েছে এমন অসামান্য একটি কবিতা। ষোলোটি চরণে এবং আটটি স্তবকে সুগঠিত এই কবিতাটি অস্থির এক সময়কালকে মনে করিয়ে দেয়।

শ্রমজীবী মানুষের জীবনযন্ত্রণা

প্রতিনিয়ত দারিদ্র্য আর খাদ্যাভাব নিয়ে জীবন অতিবাহিত হওয়ার মুহূর্তে তারা এটুকু সান্ত্বনা পেয়েছিল অন্তত বেঁচে থাকার মতো পরিবেশটুকু এখনও আছে। কিন্তু সেটুকুও যখন থাকে না তখন অসুখে ধারদেনাতে প্রবাহিত হতে থাকা জীবনে গঞ্জিকা সেবনই হয়ে দাঁড়ায় একমাত্র পথ। তাই এ কবিতার কথক বলেন,

‘চলে যায় দিন আমাদের অসুখে ধারদেনাতে

রাত্তিরে দু-ভাই মিলে টান দিই গণিকাতে’।

আরো পড়ুন :  WB XI Bengali 2nd Semester Model Question Papers 2025

যেদিন হাতে পয়সা থেকে যায় সেদিন ‘মাত্রাছাড়া’ বাজার করে কথক বাড়ি ফেরার সময় কিনে আনে তার সাধের গোলাপের চারা। গোলাপের চারা এখানে যেন স্বপ্নের প্রতীক। কিন্তু সেই স্বপ্নটুকুও ভেঙে যায়। কেননা, ততক্ষণে মনে প্রশ্ন জাগে— ‘কিন্তু, পুঁতব কোথায় ? ফুল কি হবেই তাতে ?’

এই শঙ্কাটুকু ভুলে থাকার জন্যে তারা বাপছেলে মিলে টান দেয় গঞ্জিকাতে। কবিতার শেষাংশে এসে বিংশ শতাব্দীর হা-অন্ন মানুষের জন্যে কবি জয় গোস্বামী প্রার্থনা করেন— ‘আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক’।

এভাবে একটি বিশেষ সময়ের সার্বিক বিপর্যয়, খাদ্যাভাব, অর্থাভাব, চরম দারিদ্র্য – সময়ের স্বরলিপি হয়ে প্রতিধ্বনিত হয়েছে ‘নুন’ কবিতার প্রতি ছত্রে ছত্রে।


প্রশ্ন: ‘বাপব্যাটা দু-ভাই মিলে সারাপাড়া মাথায় করি?’–কোন্ কবির কোন্ কবিতার অংশ? উদ্ধৃত পংক্তিটিতে ‘বাপব্যাটা দু-ভাই’ বলতে কবি কাদের বুঝিয়েছেন? বক্তা কেন সারা পাড়া মাথায় করেন ?

উৎস

প্রশ্নে ব্যবহৃত অংশটি কবি জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতার অংশ।

বাপ-ব্যাটা

উদ্ধৃত পংক্তিতে ‘আমরা’ বলতে বাবা-ছেলেকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ কবিতায় এরাই ‘বাপ-ব্যাটা’ নামে পরিচিত হয়েছে। ‘বাপব্যাটা দু-ভাই’ এটি একটি প্রবাদ। আঞ্চলিক ভাষায় এই প্রবাদটির প্রচলন রয়েছে। তবে প্রসারিত অর্থে ‘আমরা’ বলতে সমাজের অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটানো শ্রমজীবী মানুষের কথা বলা হয়েছে।

সারা পাড়া মাথায় করার কারণ

কবিতার শুরুতে ‘আমরা’ শব্দে নামাঙ্কিত কথক জানিয়েছে তারা ‘অল্পে খুশি’। তারা দুঃখ করে অনর্থক মন খারাপ করতে চায় না। বরং ‘সাধারণ ভাতকাপড়ে’ আর ‘অসুখে ধারদেনাতে’ তাদের দিন কেটে যায়। সবদিন অর্থের অভাবে বাজার করা হয়ে ওঠে না। কিন্তু যেদিন তাদের অর্থাভাব থাকে না, সেদিন ‘মাত্রাছাড়া’ বাজার করে খুশি হয়। আর সেই খুশিতেই বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনে ‘গোলাপচারা’।

কথক বলেছে, ‘আমরা তো এতেই খুশি’। কেননা, হেসে খেলে, কষ্ট করে তাদের দিন চলে যায়। মাঝে মাঝে অবশ্য চলে না দিন। প্রায়ই মধ্যরাতে বাপ-ব্যাটা বাড়ি ফিরে যখন খেতে বসে তখন দেখে ‘নুন নেই ঠান্ডা ভাতে”। সামান্য নুনটুকুও জুটবে না তাদের খাওয়ার পাতে? তারই প্রতিক্রিয়ায় আমরা দেখি—

‘রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি

বাপব্যাটা দু-ভাই মিলে সারাপাড়া মাথায় করি’।

কবি সংবেদনশীল বলেই প্রার্থনা করেন—‘শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক’। এটুকুতেই হতদরিদ্র মানুষের দুঃখ ভুলে থাকার রসদ পাওয়া যায়।


একাদশ শ্রেণির বাংলার অন্য লেখা

যে যে প্রশ্ন আলোচিত হলো

Table of Contents


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: সংরক্ষিত !!