প্রাক আধুনিক বাংলাবৈষ্ণব পদাবলি

অঙ্কুর তপন তাপে যদি জারব, বিদ্যাপতি, মাথুর


Last Updated on : June 12, 2024

প্রিয় শিক্ষার্থীরা,

বৈষ্ণব পদাবলীর মূল পদ ব্যাখ্যাসহ পোস্ট এখানে দেওয়া হলো। 


অঙ্কুর তপন তাপে যদি জারব, বিদ্যাপতি, মাথুর

✅ Join Our Telegram Channel ✅




অঙ্কুর তপন তাপে যদি জারব, বিদ্যাপতি, মাথুর






বিদ্যাপতি ।  মাথুর

অঙ্কুর তপন তাপে যদি জারব

কি করব বারিদ মেহে।

এ নব যৌবন বিরহে গােঙায়ব 

কি করব সাে পিয়া লেহে।।

হরি হরি কো ইহ দেব দুরাশা। 

সিন্ধু নিকটে যদি কণ্ঠ শুকায়ব

কো দূর করব পিয়াসা।

চন্দন তরু সব সৌরভ ছােড়ব

শশধর বরিখব আগি।

চিন্তামণি সব নিজগুণ ছােড়ব

কি মাের করম অভাগি।।

শ্রাবণ মাহ ঘন কিন্তু না বরিখব

সুরতরু ঝাঁঝকি ছন্দে।

গিরিধর সেবি কাম নাহি পাওয়াব

বিদ্যাপতি রহু ধন্দে।।



আলােচনা : 

বিদ্যাপতির ‘মাথুর’ বিরহ পর্যায়ভুক্ত এই পদটিতে শ্রীরাধার বিচ্ছেদ বেদনার কারণে প্রবল নৈরাশ্য, আর্তি ও জীবনতৃষ্ণা প্রকাশ পেয়েছে। শ্রীকৃষ্ণ কঠিন কর্তব্যের আহ্বানে বৃন্দাবনের লীলাবিলাস অসম্পূর্ণ রেখে মথুরায় চলে গেলেন। পিছনে পড়ে রইলেন বিরহভাবে জর্জরিতা রাধা। কৃষ্ণের প্রীতি কামনায় যিনি নিজের দেহমন সব কৃষ্ণের শ্রীচরণে উৎসর্গ করেছিলেন, সেই প্রাণ-প্রিয় কানু বিদায়কালে তিলমাত্র চিন্তা করলেন না শ্রীমতীর কথা। 
শ্রীরাধা গুমরে গুমরে ভাবছেন, যৌবনে প্রিয়সঙ্গ তার কোনও কাজে আসবে না। সিন্ধু কাছে থাকতেও যদি কণ্ঠ শুকিয়ে যায়, তাহলে তাঁর পিপাসা দূর করবে কে? তাঁর প্রতি কৃষ্ণের এরূপ ঔদাসীন্য রাধার কল্পনার বাইরে। কারণ তিনি তাে সব কিছু কৃষ্ণপদে অর্পণ করেছেন। তবু কৃষ্ণের এরূপ ব্যবহার তার স্বভাব বিরুদ্ধও বটে। যেমনটি হয়, যদি চন্দন তরু তার সৌরভ ত্যাগ করে, শশধর অগ্নিকিরণ বর্ষণ করে এবং কল্পতরু বাঞ্ছিত ফল দান না করে। আর স্বয়ং গিরিধারীকে ভজনা করে তার কাছে আশ্রয় না পাওয়া একান্তই প্রহেলিকার বিষয়।
———————————————————

 



আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হোন

আরো পড়ুন :  মঙ্গলকাব্যের কবিদের নামের তালিকা





Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: সংরক্ষিত !!